Pages

 

Thursday, January 19, 2012

হলিউডের ছবির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ঢাকাই ছবি তারপরও ভারতীয় ছবি আমদানি কেন

0 comments
বাংলাদেশের বাজারে ঢুকে গেছে ভারতীয় ছবি। ভারতের ৩৮ বছর লেগেছে এদেশের ছবির বাজার ধরতে। কিন্তু সূচনাটা মোটেও ভালো হয়নি। দশ গোল খেয়ে গো-হারা হেরেছেন ভারতীয় ছবি আমদানিকারকের ছদ্মবেশে এদেশের গুটিকয় প্রদর্শক। বক্স অফিসে ঢেউ তো দূরে থাক, বিন্দুমাত্র বুঁদবুঁদও তুলতে পারেনি ২৩ ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাংলা ছবি ‘জোর’। এ কারণে চলচ্চিত্রাঙ্গনের অনেকে গোপনে উল্লাসও প্রকাশ করেছেন। আবার এ অঙ্গনের আরেকটি অংশ এখনও চিন্তিত প্রদর্শকদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা ভেবে। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে ডজনখানেক মসলাদার হিন্দি ছবি প্রদর্শনের চেষ্টা চলছে। ‘জোর’-এর শোচনীয় ব্যর্থতার পরও দমে যাননি প্রদর্শকরা। আমদানিকৃত তিনটি ছবির একটি ‘বদলা’ এই শুক্রবারই মুক্তি দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রদর্শকরা। এই ছবিটির পরিণতিও অনেকে আঁচ করে ফেলেছেন। শঙ্কার পুরোটা এখন হিন্দি ছবিগুলো নিয়ে। যে ছবিগুলোর তালিকায় রয়েছে ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘মাই নেম ইজ খান’-এর মতো সুপারহিট বলিউড মুভি।
ভারতীয় ছবি প্রদর্শন নিয়ে দেশজুড়ে যখন তোলপাড় চলছে, ঠিক তখনই ২০ জানুয়ারি ঢাকায় মুক্তি পাচ্ছে চলতি সময়ের ব্লক বাস্টার হলিউড মুভি ‘মিশন ইম্পসিবল ঘোস্ট প্রটোকল’। টম ক্রুজ অভিনীত বিশ্বকাঁপানো মিশন ইম্পসিবল সিরিজের চার নম্বর ছবিটি এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ২১ ডিসেম্বর ছবিটি বিশ্বব্যাপী মুক্তির মাত্র এক মাসের মাথায় ঢাকায় মুক্তি পাচ্ছে। দুই বছর আগে স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ঢাকার দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন সর্বকালের রেকর্ডভাঙা ছবি ‘অ্যাভাটার’। ‘স্পাইডারম্যান, ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান, ‘ট্রান্সফর্মারস’সহ হলিউডের প্রায় সব ব্লক বাস্টারই এখন নিয়মিত প্রদর্শন করছে সিনেপ্লেক্স।
আর তাই খুব সহজেই বলা যায়, ঢালিউডের ছবি এখন হলিউডের ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে। প্রতিযোগিতার দোহাই দিয়ে যারা ভারতীয় ছবির বাজার বানাতে চাইছেন বাংলাদেশকে, তারা এখন কী বলবেন? ভারতীয় ছবি কি হলিউডের ছবির চেয়েও উন্নত? প্রযুক্তি বলুন, বাজেট বলুন, স্টার কাস্টিং বলুন—হলিউড থেকে একশ’ বছর পিছিয়ে আছে ভারতীয় সিনেমা। হলিউডের টম ক্রুজের সঙ্গে যদি শাকিব খান পাল্লা দিতে পারেন তবে শাহরুখ খান কোন্ ছাড়! ভারতীয় ছবির পক্ষে যারা সাফাই গাইছেন তারা মোটেও বাংলা ছবির কল্যাণ চান না। তারা আসলে ভারতীয় সংকর সংস্কৃতির কাছে আমাদের সংস্কৃতির মাথাটি নিচু অবস্থায় দেখতে চান। বাংলা ছবির ধ্বংস অনিবার্য করে তুলতে চান তারা।
একটা সময় ছিল যখন হলিউডের বিখ্যাত সব ছবি এদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পের দারুণ বিকাশ ঘটলে এদেশের ছবি চালিয়ে অধিক মুনাফা করতে থাকেন হল মালিকরা। ফলে হল মালিকদের কাছে কমতে থাকে ইংরেজি ছবির কদর। যতদিন ইংরেজি ছবি ব্যবসা দিয়েছে, ইংরেজি ছবি চুটিয়ে চালিয়েছেন তারা। আবার যখন বাংলা ছবির দুর্দিন যাচ্ছে তখন ভারতীয় ছবি আমদানির জন্য মরিয়া হয়েছেন। অথচ তারা সহজেই হলিউডের ছবির দিকে মুখ ফেরাতে পারতেন। এদেশের হল মালিকরা একটা ‘টাইটানিক’ চালিয়ে যে পরিমাণ লাভের মুখ দেখেছেন, তা অনেক সুপারহিট বাংলা ছবি চালিয়েও পাননি। তবে কেন তারা আজ ভারতীয় ছবি এদেশে প্রদর্শনের জন্য পাগলপারা হয়েছেন?
মধুমিতা সিনেমা হলেরও এক সময় সুনাম ছিল হলিউডের বিশ্বখ্যাত ইংরেজি ছবি প্রদর্শনের জন্য। সেই খ্যাতি এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মধুমিতা-বলাকার জায়গাটি নিয়ে নিয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স। হলিউডের যে কোনো ছবি সেখানে শুক্র-শনিবার হাউসফুল যায়। আর ব্লক বাস্টার হলে তো কথাই নেই। টিকিট পেতেও গলদঘর্ম হতে হয়। এফডিসির নির্মাতা-শিল্পী-কলাকুশলীরা তো হলিউডের ছবির এই ধুন্ধুমার ব্যবসা নিয়ে কোনো দিন প্রশ্ন তোলেননি। হলিউডের ছবিগুলোর সঙ্গে সমান তালেই ব্যবসা করছেন কাকরাইলের প্রযোজকরা। তবে কেন তারা ফুঁসে উঠলেন ভারতীয় ছবি আমদানির কথা শুনতেই। কারণ একটাই, ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংসের পাঁয়তারা হিসেবেই তারা বিষয়টিকে দেখেছেন। হলিউডের ছবি অবাধে আমদানির সুযোগ থাকার পরও বস্তাপচা ভারতীয় হিন্দি-বাংলা ছবি আমদানির কারণ আর কিছুই নয়, দেশীয় সংস্কৃতিকে সমূলে উত্পাটন করা। যেমন করে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে ঘরে ঘরে ভারতীয় সংস্কৃতির জয়ঢাক বাজছে, তেমন করেই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে চলবে শুধুই ভারতীয় ছবি। এমনটাই বোধ হয় স্বপ্ন দেখছেন কেউ কেউ। কিন্তু এদেশের সংস্কৃতিপ্রেমীরা কি সেটা মেনে নেবেন?

0 comments:

Post a Comment

 
Deshi Girls © 2011 Miazi Host Admin caontact num +966552771526 E-address mr.pondit@yahoo.com